
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় (সেজান জুস) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি পরিদর্শন করেন নাগরিক তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি দল।
রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস লিমিটেডের পুড়ে যাওয়া ভবনটির চারতলায় কিছু অর্ধগলিত হাড় পড়ে থাকার দাবি করেছেন নাগরিক তদন্ত দলের সদস্যরা।
শনিবার নাগরিক তদন্ত কমিটির সদস্যরা ভবনটি পরিদর্শনে গেলে ওই অর্ধগলিত হাড়গুলো দেখতে পান। তাদের ধারণা পুড়ে যাওয়া হাড়গুলো কোনো নারী শ্রমিকের হতে পারে।
নাগরিক তদন্ত দলের সদস্য ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ছয় তলা ভবনটির চার তলার দক্ষিণ–পূর্ব কোণের একটি পোড়া স্তুপে হাড়গুলো পড়ে থাকতে দেখেছি। হাড়গুলো একটি পাজামা দিয়ে মোড়ানো। ধারণা করা হচ্ছে, এটা কোনো নারী শ্রমিকের কোমড়ের অংশ। চার তলায় প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই দুর্গন্ধ রানা প্লাজা, তাজরিনের ঘটনার পরও আমরা পেয়েছিলাম। এই হাড়গুলো এখনো কেন পড়ে আছে, আসলেই মৃত্যুর সংখ্যা কত, এ বিষয়গুলো আরও তদন্ত করতে হবে।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘হাড়গুলো আমরা দেখেছি। পুরো ভবনেই বিভিন্ন মালামালের পোড়া স্তুপ আছে। আমরা তদন্তের সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনা করব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ জেলার উপসহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরাও তদন্ত কমিটির সঙ্গে ভবন পরিদর্শনে ছিলাম। তখন এমন কোনো ঘটনা দেখতে পাইনি। এমন কিছু আছে কিনা তা খুঁজে দেখছি।’
এই দলে আছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, ডা. মো. হারুন-রশিদ, প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, গবেষক ও সাংবাদিক প্রিসিলা রাজ ও মাহা মির্জা, শিল্পী ও সংগঠক বীথি ঘোষ, বাংলাদেশ শ্রম ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি গোলাম মুর্শেদ, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম সবুজ, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন।
গত ৮ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জের হাসেম ফুড লিমিটেডের ৬ তলা কারখানা ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৮ টি ইউনিট টানা প্রায় ৪৮ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।