
মিরর ডেস্ক : প্রথমে মুখ ধুয়ে নিন আপনার ত্বকের সঙ্গে খাপ খায় এমন কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে। স্পর্শকাতর ত্বক হলে ব্যবহার করতে পারেন ভেষজ ফেসওয়াশ।
ধাপ-২ : এরপর ব্যবহার করুন ফেসপ্যাক। ঘরেই তা বানাতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য ১ টেবিল চামচ উপটান+১ চা চামচ টকদই+১ চা চামচ দুধের সর বা দুধ।
তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য : ১ টেবিল চামচ উপটান+১ চা চামচ টকদই+১ চা চামচ লেবুর রস। এগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান।পুরোটা শুকাবেন না, অর্ধেক শুকিয়ে এলে মুখ হালকা ঘষে ধুয়ে ফেলুন। প্যাকে মেশাতে পারেন গোলাপজল, যা সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো।
ধাপ-৩ : ময়েশ্চারাইজার হিসেবে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা ভেজা মুখে স্রেফ ২-৩ ফোঁটা যে কোনো বেবি অয়েল মেখে নিন। তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করাই উচিত। ব্রণের জন্য যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণ আছে, তারা প্যাক ধুয়ে ফেলে ময়েশ্চারাইজারের বদলে ব্যবহার করুন অ্যাসট্রিনজেন্ট। ঘরোয়া অ্যাসট্রিনজেন্ট হলো গোলাপজল ও শসার রস। এগুলো ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিলে আরও ভালো। শসার রস করে বরফ জমানোর পাত্রে রেখে আইস-কিউব করে নিতে পারেন। প্রতি রাতে রস বানানোর ঝামেলায় না গিয়ে একটি কিউব মুখে ঘষে নিন। সমপরিমাণে পুদিনা পাতা ও নিমপাতা বেটে শুধু ব্রণ ও দাগের ওপর লাগিয়ে ঘুমান। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। পুদিনা পাতা ব্যবহার করতে পারেন ফেসপ্যাকেও। ব্রণের জন্য ভীষণ উপকারী।
চোখ: চোখের ডার্ক সার্কেল কমাতে ঘুমানোর আগে শসা বা আলু ঠাণ্ডা করে বা ঠাণ্ডা টি- ব্যাগ চোখের ওপর দিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট।
হাত ও পা : প্রতি রাতে পা ধুয়ে লোশন লাগিয়ে ঘুমাতে যান। এছাড়া নিয়মিত যত্ন হিসেবে সপ্তাহে দু-একবার যেটা করতে পারেন তা হলো— রাতে পা প্রথমে সাবানদিয়ে পরিষ্কার করে, ২ টেবিল চামচ কুসুম গরম অলিভ অয়েল+১ চা চামচ লবণের মিশ্রণ তৈরি করে সেটা পায়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এতে মৃতকোষ ঝরে যাবে, গোড়ালি নরম হবে, ম্যাসাজে রক্ত চলাচল ভালো হবে। এর বদলে মুখের জন্য যে স্ক্রাব ব্যবহার করেন, তা দিয়েও ম্যাসাজ করতে পারেন। ধুয়ে লোশন লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন। সারাদিন পর পা দুটোকে যথোপযুক্ত আরাম দিন। হাতের যত্নও নিতে পারেন একইভাবে। মুখ, হাত, পা যে কোনো ম্যাসাজই করতে হবে হালকা হাতে, আলতোভাবে। তা না হলে হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে।
চুল : যাদের বড় চুল, তারা বেণী করে নিন ঘুমানোর আগে। তাতে চুল সারা রাত ঘষা খাবে না। ছোট চুল হলে খোলা রেখে শুলেও অসুবিধা নেই। তেল ম্যাসাজ করে শুলে ঘুম ভালো হবে।
নখ : নখ ফেটে বা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা কমাতে ঘুমানোর আগে হাত- পায়ের নখে জলপাই তেল (অলিভঅয়েল) ম্যাসাজ করে নিন। সারা রাত নখ আর্দ্রতা পাবে।
ঠোঁট: সবই যখন হলো, বাদ যায় কেন ঠোঁটজোড়া। নরম গোলাপি ঠোঁট পেতে প্রতি রাতে ভ্যাসলিনের সঙ্গে অল্প লবণ মিশিয়ে ঠোঁটে ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। এতে ঠোঁটের মৃত কোষ ঝরে উজ্জ্বলতা আসবে।
খাদ্যাভ্যাস: ‘আমাদের দেশের প্রথা অনুযায়ী সবাই একত্র হওয়ায় রাতের খাবারই হয় সারাদিনের মূল ও বেশ ভারি আহার। তাই ঘুমানোর আগে হালকা খাবার খাওয়াটা বাঞ্ছনীয় হলেও চাইলেও আলাদা করে নিজের জন্য মেয়েরা এক বাটি স্যুপ বা ফল নিয়ে বসতে পারেন না।’ রাতের খাওয়ার মেনু বদলের ঝঞ্ঝাটে না গিয়ে পরিবারের সবাই মিলে ঘুমানোর অন্তত ঘণ্টা তিনেক আগে খাওয়ার অভ্যাস করুন, যাতে খেয়েই শুয়ে না পড়তে হয়, যা খুব ক্ষতিকর। খেয়ে আধ ঘণ্টা হাঁটুন।
ছোট খাটো ব্যায়াম : জানা থাকলে অন্যান্য ছোটখাটো ব্যায়াম,ইয়োগা বা মেডিটেশন করতে পারেন। তার আধ ঘণ্টা পর শুতে যান। এতে শরীর বেশ ঝরঝরে লাগবে। খাওয়ার পর খেতে পারেন এক কাপ চায়নিজ জেসমিন টি, এতে শরীরে মেদ জমবে না। ঘুমানোর আগে একগ্লাস পানি খেয়ে নিন। নিয়মমাফিক পরিচর্যা, সুষম খাবার, সুন্দর জীবনযাপন আপনাকে ভালো ও সুস্থ রাখবে। আর সুস্থতা প্রতিফলিত হবে আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্যে। তাই আপনার বিরামহীন কর্মব্যস্ততার মধ্যেও ঘুমের আগে এটুকু ঘরোয়া পরিচর্যায়ই আপনি থাকবেন একদম সুস্থ, প্রাণবন্ত,সুন্দর।