
ঢাকা : বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশে যারা বঙ্গবন্ধুকেই অস্বীকার করে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয় বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং দেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। রবিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনা নিছক হত্যাকান্ড নয়, এর পেছনে গভীর দুরভিসন্ধি ছিল উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা থেকে সরানো নয়, এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই একাত্তরের পরাজিত দেশি-বিদেশি অপশক্তি এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে, কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মকে ঠিক ইতিহাস জানাতে জিয়াউর রহমানসহ এই হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচনে কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি, বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুকে রাজনীতির কবি হিসেবে বর্ণনা করে ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের পর পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের রিপোর্টে লিখেছিল, ‘চতুর শেখ মুজিব কার্যত বাংলাদেশের স্বাধীনতাই ঘোষণা করে দিলেন কিন্তু তাকিয়ে দেখা ছাড়া আমাদের কিছুই করার ছিল না।’ বঙ্গবন্ধুর এক ডাকে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালি নিজের প্রাণকে হাতের মুঠোয় নিয়ে যুদ্ধে গেছে, তিরিশ লাখ শহীদের রক্ত পাড়ি দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনেছেন, বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষের পর প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র গড়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর সেকারণেই তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বলেন তথ্যমন্ত্রী।
সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, ১৫ আগস্টে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মতো এতো নৃশংস হত্যাকান্ড বিশ্বে বিরল। কিন্তু এরপরও হত্যাকারী চক্র জাতির পিতার স্বপ্নকে হত্যা করতে পারেনি, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ আজ স্বপ্নের সোনার বাংলার পথে আগুয়ান। এদিন সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ প্রথমে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ও এরপর বনানী কবরস্থানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বনানীতে সাংবাদিকবৃন্দের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বিএনপি ও তাদের দোসরেরা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার ও খাটো করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করা স্বাধীনতাকে অস্বীকার করারই নামান্তর। সুস্থ রাজনীতির স্বার্থে এদের রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।’ বিকেলে বাদ-আছর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির আয়োজনে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনা ও জাতির জন্য দোয়া মাহফিলে অংশ নেন ড. হাছান মাহমুদ।