
মিরর ডেস্ক : মুখে বাজে গন্ধ অনেকেরই হয়ে থাকে। এমন সমস্যায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বন্ধু-সঙ্গীরা মুখ ফিরিয়ে নেয় অনেক সময়। এমন জটিল সমস্যার সহজ সমাধান আছে। এ সম্পর্কে যুগান্তরে লিখেছেন ডা. অনুপম পোদ্দার। তিনি ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের পেরিওডন্টোলজি ও ওরাল প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান।
১/মুখে দুর্গন্ধ কেন হয় ।
২/খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ।
৩/শারীরিক কিছু রোগ এবং মুখ ও দন্ত রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ।
৪/সঠিক পদ্ধতিতে দন্ত পরিচর্যা ।
৫/দীর্ঘসময় ধরে না খেয়ে থাকা ৬/মুখের থুথু কমে যাওয়া- থুথু মুখের ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন বন্ধ করে কিন্তু রমজানে থুথুর পরিমাণ কমে যাওয়ায় ব্যাকটেরিয়াগুলোর দ্রুত প্রজনন হয়ে থাকে, যা দুর্গন্ধের কারণ হয় ।
৭/যেসব খাবার মুখের পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে, তা বেশি খাওয়া।
৮/কম পানি পান করা।
৯/যেসব খাবার মুখের দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে, সেহরি বা ইফতারের সময় সেগুলো খাওয়া।
১০/ নিয়মিত নিয়মমতো মুখ ও দাঁতের পরিচর্যা না করা
১১/ কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা থাকা যেমন- নিয়ন্ত্রণহীন ডায়াবেটিস, পেটের পীড়া, লিভারের সমস্যা, টনসিলজনিত সমস্যা ইত্যাদি।
১২/ মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাসগত সমস্যা ।
১৩/ দীর্ঘ সময় কিছু না খাবারের কারণে ও জিহ্বা পরিষ্কার না করার কারণে জিহ্বার উপর সালফারের প্রলেপ পড়ে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
কী করবেন :
১/মুখের এ দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে আমরা যেসব ব্যবস্থা নেব-
২/ দৈনিক কম করে হলেও ৩ থেকে ৪ লিটার গ্লাস পানি খেতে হবে।
৩/ ফলমূল, শাকসবজি, দইজাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত।
৪/ লেবু, জাম্বুরা, কমলা, কামরাংগা, মাল্টা ও আনারসের শরবত পান করা।
৫/গাজর, শসা, টমেটো, আমড়া ও আমলকি ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখা।
৬/ মুখ ও দাঁতের সঠিক পরিচর্যা করা।
খাবারের পর ৩০-৬০ মিনিট আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, ব্রাশ করার জন্য যেন প্রাকৃতিক উপায়ে থুথুর মাধ্যমে খাদ্য পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে ও মুখের নরমাল PH বহাল থাকে। খাবারের পরপরই মুখের PH এসিডিক থাকে, খাবার পর থুথু প্রথম মুখের PH নরমাল করে। তাই খাবারের পরপরই দাঁত ব্রাশ করার ফলে এনামেলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপরদিকে এসিডিক PH -এ ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন হার বেশি।
১/ অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ যেমন- ০.২ শতাংশ ক্লোরহেক্সিডিন অথবা ০.৫ শতাংশ পভিডোন আয়োডিন প্রতিদিন ৩ বার, ২ চামচ ৩০ সেকেন্ড ধরে প্রতিবার কুলকুচি করতে হবে। গোলাপ জল দিয়ে গার্গল করা যেতে পারে।
২/ প্রতি রাতে ১ বার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে।
৩/ মেনথল গাম ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে খাওয়া যেতে পারে।
৪/ নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করা।
৫/মুখ ও দাঁতের অসম্পূর্ণ চিকিৎসা সম্পন্ন করে নেওয়া, যাতে খাবার না জমতে পারে।
৬/ বর্তমানে কোভিড-১৯জনিত কারণে যেহেতু সবসময় মাস্ক পরে থাকতে হয়, এজন্য মুখ দিয়ে সবাইকে শ্বাস নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। তাই সিডিসি গাইডলাইন অনুযায়ী, রোজাকালীন ৪ ঘণ্টা পরপর মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। পুনরায় ব্যবহারকৃত মাস্কগুলো ৪ ঘণ্টা পর প্লাস্টিকের ডাস্টবিনে রাখতে হবে পরে ধুয়ে পরতে হবে। রুমে একা থাকার সময় মাস্কবিহীন থাকা ভালো।
৭/ মাছ অনেক সময় দুর্গন্ধের কারণ হয়। তাই মাছের উপর লেবুর রস দিলে দুর্গন্ধ মুক্ত হয়।
বর্জনীয়
৮/ পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ ইত্যাদি খাদ্যের মধ্যে যে কেমিক্যাল থাকে তাহা রক্তবাহিত হয়ে প্রথমে ফুসফুসে আক্রমণ করে পরে তা প্রশ্বাসের মাধ্যমে বেরিয়ে এসে গন্ধের সৃষ্টি করে।
৯/ধূমপান পরিহার করতে হবে।
১০/ খাবার সোডা ও কার্বোনেটেড ফলের রসে উচ্চমাত্রায় চিনি থাকে তাই এগুলো পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে।
১১/ মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস বর্জন করতে হবে।