
মিরর ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন ১৬ আগস্ট পদত্যাগের পর ফের টালমাটাল হয়ে ওঠে মালয়েশিয়ার রাজনীতি। আলোচনা শুরু হয় কে হচ্ছেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ফের মাহাথির মোহাম্মদ, নাকি প্রথমবারের মতো শিকে ছিঁড়বে আনোয়ার ইব্রাহিমের ভাগ্যে। এমন আলোচনার মধ্যে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের নাম উঠে এসেছে। এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন তিনিই।
মুহিদ্দিন ইয়াসিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর দেশটির রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ জানিয়ে দেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন করে নির্বাচন সম্ভব নয়।তবে নতুন একজনকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গেলেও মুহিদ্দিন ইয়াসিনকেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেন তিনি। নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।
গত মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আব্দুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। রাজা প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য তাদের পছন্দের একজনের নাম জমা দিতে বলেন। রাজার নির্দেশে সংসদ সদস্যরা অনলাইনে পছন্দের ব্যক্তির নাম জমা দেন। বুধবার বিকাল ৪টার মধ্যে সংসদ সদস্যরা অনলাইনের মাধ্যমে স্পিকারের ব্যক্তিগত সচিব আগং দাতো নাজিম মোহাম্মদ আলিমের কাছে নাম জমা দেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও পেরিকাতান ন্যাশনালের চেয়ারম্যান মুহিদ্দিন ইয়াসিন রাজা জানিয়েছেন, তার জোটের ১১৪ সংসদ সদস্য রাজা সুলতান আব্দুল্লাহর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবকে সমর্থন জানিয়েছেন।
২শ’ ২০ সংসদ সদস্যের মধ্যে সাবেক ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবকে ১শ’ ১৪ সংসদ সদস্যের সমর্থনের অর্থ হলো এবারো প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে হারতে চলেছেন বিরোধী পাকাতান হারপান জোটের নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম। কারণ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ১শ’ ১১ সংসদ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন। আনোয়ার ইব্রাহিমের দল ও তাকে সমর্থনকারী ছোট ছোট জোটের সম্মিলিত ভোট সংখ্যা ১শ’ ৫।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা ইউএমএনও দলের পতনের পর থেকেই চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। সে সময় মাহাথির মোহাম্মদ তারই একসময়ের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে জোট গঠন করে সরিয়ে দেন তার উত্তরসূরি নাজিব রাজাককে। তিনি হন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ নির্বাচিত নেতা। মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বে বিরোধী জোট জিতলেও নানা বিষয়ে মতবিরোধের কারণে সে সরকার টেকেনি। ফলে গত বছর ১ মার্চ প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ পদত্যাগ করেন। পরে মালয়েশিয়ার অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন মুহিদ্দিন ইয়াসিন। অনাস্থার মুখে মাত্র ১৭ মাসের মাথায় পদ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
১৬ আগস্ট রাজা সুলতান আব্দুল্লাহর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে গুঞ্জন রয়েছে, ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে তার উপদেষ্টা বা পরামর্শকের দায়িত্বে থাকবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন।দীর্ঘদিন ধরেই অর্থনৈতিক সংকট, করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ব্যর্থতাসহ নানা কারণে মালয়েশিয়ায় অস্থিরতা চলছে।