মিরর ডেস্ক : মিয়ানমারের জান্তা সরকারের হাতে আটক থাকা দেশটির ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের প্রধান অং সান সু চি ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজই গ্রহণ করেছেন। সু চির আইনজীবী তার ভ্যাকসিন নেয়ার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত থাকায় চীনেও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। মিয়ানমারের বর্তমান জনসংখ্যা ৫ কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ৩৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
গত ১ ফ্রেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। সে সময় সু চিসহ দেশটির বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে আটক করা হয়।
সামরিক জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের এক সপ্তাহ পর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে নামে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে আসছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী এবং বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরাও রাজপথে নেমে এসেছেন। ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এর মধ্যেই করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে পড়েছে।
তবে ৭৬ বছর বয়সী সু চি কবে, কোথায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন বা তাকে কোন ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। এছাড়া জান্তা সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
সু চির সরকারকে সরিয়ে তাকে আটকের পর থেকে এখন পর্যন্ত তাকে খুব কম সময়ের জন্যই জনসম্মুখে দেখা গেছে। শুধু আদালতের শুনানির সময়ই তাকে বাইরে আনা হচ্ছে। বাকি সময়টা অনেকটা গোপনেই দিন কাটছে তার।
গত ২৪ ঘণ্টায় মিয়ানমারে নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৬০২। অপরদিকে মিয়ানমারের সঙ্গে অবস্থিত চীনের সীমান্ত শহর রুইলিতে নতুন করে ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারত থেকে ১৫ লাখ ডোজ এবং চীন থেকে ৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছে মিয়ানমার। দেশটি আরও ভ্যাকসিন সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে এএফপি।
এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মিয়ানমারে নতুন করে বিধি-নিষেধ জারি হচ্ছে। গত সোমবার থেকে রাজধানী নাইপিদোর কোনো রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। আরও বিধি-নিষেধও আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে চীনের রুইলি শহরে গত সোমবার থেকে লকডাউন জারি করা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে সংক্রমণ ছড়ানোয় গত চার মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ওই শহরে লকডাউন জারি হলো। সংক্রমণ রোধে ওই শহরের ২ লাখ ১০ হাজার বাসিন্দার সবাইকে পরীক্ষা করা হয়েছে।
খবর বিবিসির।