
অর্থনীতি রিপোর্ট : ঈদের পর প্রথম কার্যদিবস রবিবার ব্যাংকে ভর করে দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিললেও, একদিনের ব্যবধানে সোমবার (২৬ জুলাই) সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে বাজার মূলধনে সব থেকে বড় অবদান রাখা এই খাতটিতে।
ব্যাংকের পাশাপাশি বীমা ও বস্ত্র খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে অন্য খাতেও। ফলে দিনের লেনদেন শেষে পতনের খাতায় নাম লিখিয়েছে দেশের শেয়ারবাজার।
মূলত এদিন ব্যাংক, বীমা ও বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো মূল্য সূচক টেনে নামাতে বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে স্রোতের বিপরীতে ছিল ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলো। অন্য খাতের একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্যে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ওষুধ কোম্পানিগুলো। অবশ্য ওষুধ কোম্পানিগুলোর শেয়ারের এই দাম বৃদ্ধি দরতপন ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
ফলে দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। অবশ্য সূচকের এই পতনের মধ্যে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ৬টির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬টির। আর ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বীমা খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ১৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৪টির এবং একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাকি একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি। আর বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ১৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপরদিকে ওষুধ খাতের তালিকাভুক্ত ৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮টির। বাকি একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি। অবশ্য বেশিরভাগ ওষুধ কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার পরও সব খাত মিলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১শ’ ১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২শ’ ২৯টির। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৪শ’ ৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩শ’ ২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩শ’ ৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্য সূচকের পতন হলেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪শ’ ২৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৩শ’ ৫৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৫ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাইফ পাওয়ারটেকের ৪০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪০ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, ফু-ওয়াং সিরামিক, জিপিএইচ ইস্পাত, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যাল, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, এসএস স্টিল এবং ওরিয়ন ফার্মা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩শ’ ৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১শ’ ৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১শ’ ৫৫টির এবং ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।