
বরগুনা প্রতিনিধি : কখনও রাজনীতি করেননি। ছিলেন না বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কিংবা এর কোনও অঙ্গ সংগঠনের সদস্য। তবুও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, দেশপ্রেম ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মুগ্ধ হয়েছিলেন বরগুনার তালতলী উপজেলার কৃষক মো. ইসহাক শরীফ (৯২)। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার কারণে হত্যার পর থেকে ৪৬ বছর ধরে কালো পোশাক ও খালি পায়ে কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জীবনের শেষ সময়ে এসে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি চান ইসহাক। একইসঙ্গে জাতির পিতা কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে চান তিনি।
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট বগি ইউনিয়নের উত্তর চরপাড়া গ্রামে ১৯২৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর জন্ম নেন মো. ইসহাক শরীফ। পারিবারিক নানা সমস্যার মধ্যেও ক্লাস ওয়ান পর্যন্ত পড়ালেখার সৌভাগ্য হয় তার। এরপর জীবন ও জীবিকার খোঁজে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি। কখনও দিনমজুর, কখনও কৃষকের কাজ করে সংসার চালিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার ৮ সন্তান। তাদের মধ্যে চার ছেলে ও চার মেয়ে। প্রত্যেককেই বিয়ে দিয়েছেন ও তাদের ঘরেও সন্তান রয়েছে।
ইসহাক শরীফ জানান, সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নিলেও মুক্তিযোদ্ধাদের যখন যেভাবে পেরেছেন সহযোগিতা করেছেন। যুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার ও এর পূর্ববর্তী সময় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, আদর্শ ও দেশপ্রেমে মুগ্ধ হন তিনি। মনের অজান্তেই এক অসীম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা সৃষ্টি হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতি। তাইতো তার কোনও কর্মসূচি থাকলেই সেখানে হাজির হতেন শুধু একপলক দেখার জন্য।
যুদ্ধ শেষে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। ইসহাক শরীফও বরগুনা থেকে ঢাকায় গিয়ে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারের হত্যার খবর শুনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে সেই সময় জান্তাদের ভয়ে চলে এসেছিলেন বরগুনায় তার গ্রামের বাড়িতে। এরপর থেকে কালো পোশাক ও খালি পায়ে কাটিয়ে দিয়েছেন ৪৬ বছর।