
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনায় করোনা শনাক্তের জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ কিট ব্যবহার করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া, নমুনা পরীক্ষায় নানা অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকালে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে যাওয়া অনেকে সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
নমুনা পরীক্ষা করাতে আসা কয়েক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, শহরের টাউন হল সংলগ্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ১০টায় গিয়ে ১০০ টাকা জমা দিলে সেখান থেকে একটি কাচের টিউব হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেটি নিয়ে পাশেই তাড়াশ ভবনে নমুনা দেওয়ার জন্য যান তারা। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেখানে দাঁড়িয়ে থেকেও সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, সাড়ে ১০টার পরে একজন পুরুষ ও একজন নারী স্বাস্থ্যকর্মী এসে সেবাপ্রার্থীদের লাইনে দাঁড় না করেই এলোমেলোভাবে নমুনা সংগ্রহ শুরু করেন। এক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। গাদাগাদি আর ঠেলাঠেলি করে নমুনা দেন সবাই। নমুনা সংগ্রহের জন্য বুথ নেই। নেই বসার ব্যবস্থাও। মেয়াদোত্তীর্ণ টেস্ট কিট দেখে অবাক হন সবাই। বিষয়টি ওই স্বাস্থকর্মীদের জানালে তারা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলুন।’
সেবাপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, করোনা নমুনা সংগ্রহের কিটের গায়ে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লেখা আছে—জুন, ২০২১। সে টিউব দিয়েই চলছে নমুনা সংগ্রহ। অপরদিকে, যে কটনবাড দিয়ে নাকের ভেতর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো প্যাকেট ছিঁড়ে এলোমেলোভাবে ফেলে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় পাবনা সদর উপজেলা চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বেশকিছু কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আমরা লোকবল সংকটে ভুগছি। কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে সেবা প্রদানে। তারপরও সুষ্ঠুভাবে সেবা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়টি শোনার পর অনুসন্ধান করে জানতে পারি, টেস্টটিউব দেওয়ার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি পুরনো ও নতুন টেস্টটিউব মিশিয়ে ফেলায় এমনটি ঘটেছে। দায়িত্ব পালনে অবহেলায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সবগুলো টেস্টটিউব থেকে বাছাই করে ৩৮টি টিউব মেয়াদোত্তীর্ণ পাওয়া গেছে। সেগুলো আলাদা করে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই ৩৮টি টিউব দিয়ে যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাদের ফোন করে পুনরায় নমুনা দিতে বলা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেছেন, ‘সিভিল সার্জনকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আশা করি, তিনি এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।’