
পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দেশের উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ গরুর হাট দিনাজপুরের পার্বতীপুরের আমবাড়ী। সরকারী নির্দেশ অমান্য করে সোমবার কাক ডাকা ভোরে বসেছিল হাট। হাজার হাজার গরু বিক্রি হয় এই হাটটিতে। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১১টায় পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযান চালিয়ে হাটটি বন্ধ করে দেন।
এ সময় অফিসারকে দেখে অনেকেই গরু ছেড়ে পালিয়ে যান। এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত চার জন গরু ব্যবসায়ীকে ২ হাজার ৭শ’ টাকা জরিমানা করেন। তবে, অভিযানের আগেই কয়েক হাজার গরু বিক্রি হয়ে যায় হাটটিতে। গরু প্রতি হাসিল আদায় করা হয় ৪শ’ টাকা করে।
উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ গরুর হাট নামে পরিচিত পার্বতীপুরের আমবাড়ীর হাট। ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা গরু কিনতে আসেন এই আমবাড়ী হাটে। হাজার হাজার গরু ট্রাকে ভরে নিয়ে যান তারা। করোনার কারনে সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না গরুর হাটে। ইজারাদারকে করোনাকালে আর হাট না বসাতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল।
কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ইজরাদার কৌশলে সোমবার কাক ডাকা ভোর থেকে আমবাড়ী হাটটি চলতে থাকে। রবিবার রাত থেকেই গরু আসা শুরু হয় এই হাটে। কাক ডাকা ভোরে গরু ব্যবসায়ীরা শ্যালো চালিত ভটভটি ও ট্রাকে করে হাজার হাজার গুরু নিয়ে হাজির হন হাটে। ভোর সাড়ে ৫টা থেকেই শুরু হয় গরু বিক্রি। সকাল সাড়ে ৯ টার মধ্যে কয়েক হাজার গরু বিক্রি হয়ে যায় বলে জানান স্থানীয়রা।
দিনাজপুর সদরের গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ও আজিজুল হক জানান, গরু ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানতো ভোর থেকে হাট বসবে। তাই তিনি সূর্য উঠার আগেই ৫টি গরু নিয়ে হাটে এসে ছিলেন। সকাল ৮টার মধ্যে তার গরুগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। প্রতিটি গরু ১ লাখ ১০ হাজার টাকার ওপরে বিক্রি করেছেন তিনি। তিনি আরও জানান, প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞার কারনে অধিকাংশ গরু ব্যবসায়ী রাতেই গরু নিয়ে এসে ছিলেন হাটে। দূরবর্তী ক্রেতারাও রাতের মধ্যে হাটে এসে অবস্থান করেন। তিনি বলেন, সকাল ১১টার মধ্যে হাজার হাজার গরু বিক্রি হয়ে যায় হাটটিতে। আর গরুর হাটে স্বাস্থ্য বিধি মানার কোন সুযোগ থাকে না বলে তিনি জানান।
আমবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশাদুজ্জামান জানান, সাপ্তাহিক গরুর হাট না বসাতে সরকারী নির্দেশনা থাকলেও হাট বসিয়েছেন ইজরাদার।
আমবাড়ী হাটের ইজারাদার মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতি সোম ও শুক্রবার আমবাড়ী হাট বসে। এ বছর ৫ কোটি ১১ হাজার টাকায় হাটটি ইজারা নিয়েছেন তারা। ভ্যাটসহ ৬ কোটি ২৫ লাখ ১৩ হাজার ৭শ’ ৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে তাদের। গত বছরেও তাদের লোকশান হয়েছে। করোনার কারনে হাট চালানো না গেলে আবারও লোকশান গুনতে হবে তাদের।
পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাশিদ কায়সার রিয়াদ বলেন, ইজারাদারকে হাট বন্ধ রাখতে বলা হলেও ভোর থেকে হাটে গরু বেচা-কেনা শুরু করে ছিল। তাই অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে হাটটি। দিনাজপুর জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, সরকারী নির্দেশমতে উপজেলার সকল হাট-বাজার সব বন্ধ করতে বলা হয়েছে।