
অর্থনীতি রিপোর্ট : গেল সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে মাত্র দুই কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এ দু’দিনে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। এতে চলতি মাসের তিন সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক।
গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ১শ’ ৮৫ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ২৫ হাজার ২শ’ ৭১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯ কোটি ৯শ’ ১৪ কোটি টাকা।
আগের দুই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ১০ হাজার ৯শ’ ৮৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি মাসে ইতোমধ্যে ডিএসইর বাজার মূলধন ২০ হাজার ৯শ’ ৩ কোটি টাকা বেড়ে গেছে। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে।
বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে। অর্থাৎ বাজার মূলধন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৯৭ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৯৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ৬২ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। অর্থাৎ তিন সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ২শ’ ৫৫ পয়েন্ট।
তিন সপ্তাহের এই টানা উত্থানের কারণে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থাতে পৌঁছে গেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স। মূল্যসূচকের ভুল গণনা বন্ধ করতে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি নতুন সূচক ডিএসইএক্স চালু করে ডিএসই। ৪ হাজার ৫৫ দশমিক ৯০ পয়েন্ট দিয়ে শুরু হওয়া সূচকটি এই প্রথম ৬ হাজার চারশ পয়েন্ট স্পর্শ করেছে। বর্তমানে সূচকটি ৬ হাজার ৪শ’৫ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
প্রধান মূল্যসূচক রেকর্ড অবস্থানে উঠে আসার পাশাপাশি গেল সপ্তাহে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকও ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বাড়ে ৪৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ৩৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
অপরদিকে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ২৮ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ২৬ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫শ’ ২৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৬শ’ ৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১শ’ ৪৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৫৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ছয় হাজার ৭শ’ ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে তিন হাজার ৬শ’ ৪৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ৫৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ গত সপ্তাহে মাত্র দুই কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে।