
স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : কালের স্রোতে মাটির ঘর আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে মাটির দোতলা ঘর খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা পল্লীতে এখনও টিকে আছে মাটির দোতলা ঘর। ইতিহাস বলছে এগুলোর বয়স প্রায় ২শ’ বছর।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে দুটি মাটির দোতলা ঘর এখনও কালের চিহ্ন বুকে নিয়ে, স-গর্বে দাঁড়িয়ে আছে। এর একটির নাম ‘ভাই ভাই’ বাস ভবন। দোতলা ঘরে চারটি কক্ষ। দোতলায় রয়েছে টানা বারান্দা। ঘরের ভেতরে উপরে ওঠার সিঁড়ি। সিঁড়িও মাটির তৈরি। এর সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে তালগাছের বর্গা ও বাঁশ। ঘরের উপরের ছাউনি টিনের। দেখে মনে হয়, আরো ৫০ বছর টিনগুলো টেকসই হবে। দোতলার মাটির দেয়ালে রয়েছে সৌখিন কারুকাজ। পাশাপাশি দু’টি দোতলা ঘর সেকালের ঐতিহ্য এখনও ধরে রেখেছে। পথচারীরা একবার হলেও অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন ঘরের দিকে।
কথা হয় ফনি ভুষন নামে একজনের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি বিরামপুর শহরে। অনেকক্ষণ ধরে দোতলা ঘর দুটো দেখছি- কত মজবুতভাবেই না তৈরি করা হয়েছে! দেখছি আর বিস্মিত হচ্ছি। এখানে এসে মাটির ঘর দেখব ভাবিনি।’ আবুল কাসেম নামে স্থানীয় একজন বলেন, ‘বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই আমাদের গ্রামে দোতলা ঘরগুলো দেখছি। গ্রামে আরো কয়েকটি মাটির দোতলা ঘর ছিল, এখন নেই। সেগুলো ভেঙে দালান তৈরি করা হলেও এই দুটি ঘর রয়ে গেছে।’
ভাই ভাই বাস ভবনের এক ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, দাদার আমলের ঘর। মায়ের মুখে শুনেছি, দাদা বাবাকে এই ঘর, আর বাড়ির পাশে একটি প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো বটগাছ কাটতে নিষেধ করেছিলেন। মা এখনও বেঁচে আছেন। তার ইচ্ছে এই ঘরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবেন। আমরা দুই ভাই যতদিন আছি, এই মাটির ঘরেই থাকব।