
মিরর ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দীর্ঘদিন আগে নিবন্ধন করে যখন টিকা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ, তখন বিভিন্ন ক্লিনিক-ফার্মেসিতে টাকায় মিলছে সেই টিকা! যদিও দেশে টিকা আসার পর এগুলো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) নিজস্ব স্টোররুমে কঠোর নিরাপত্তায় সংরক্ষণের কথা।
তবুও কী করে এই টিকা ফার্মেসি-ক্লিনিকগুলোতে গেল, প্রশ্ন এখন সবার মুখে। এ প্রসঙ্গে ইপিআই বলছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এর আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার ‘দরিদ্র পরিবার সেবা’ নামে একটি ক্লিনিকে অবৈধভাবে করোনাভাইরাসের মডার্না টিকা দেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক বিজয়কৃষ্ণ তালুকদারকে (৩৭) আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক মিয়া বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার দরিদ্র পরিবার সেবা নামে একটি ক্লিনিকে অবৈধভাবে মডার্না টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ক্লিনিকটিতে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে গিয়ে আমরা দেখি, ক্লিনিকে দুই জন টিকা নিচ্ছেন। পরে অভিযানে সরকারি নীতিমালা ছাড়া অবৈধভাবে করোনার টিকা দেওয়া অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি মালিক বিজয়কৃষ্ণ তালুকদারকে (৩৭) আটক করি। এ সময় ক্লিনিকটি থেকে মডার্নার টিকার দুটি এম্পুল পাওয়া যায়। যার একটির মধ্যে টিকার আইসিক ছিল। এছাড়া মডার্নার টিকার খালি বক্স পাওয়া যায় ২২টি। সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক কর্মকর্তা বলেন, অজানা কারণেই মর্ডানার টিকায় সাধারণ মানুষের আস্থা বেশি। আবার এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ নিবন্ধন করেও কাঙ্ক্ষিত টিকা পাচ্ছে না মানুষ। তাই যেখানেই টিকার খোঁজ পাচ্ছে, সেখান থেকেই নেওয়ার চেষ্টা করছে। আর এ সুযোগটাই নিচ্ছে অসাধু কিছু সুবিধাভগীরা।
কীভাবে এই টিকা ক্লিনিক-ফার্মেসিতে যাচ্ছে জানতে চাইলে ইপিআইয়ের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. মওলা বক্স চৌধুরী বলেন, আমি ১১ দিন যাবৎ করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে আছি। তাই কীভাবে কী হলো আমি বলতে পারছি না। আমরা অবশ্যই এটা নিয়ে তদন্ত করবো, এরপরই আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। তবে এর আগে আমি কিছু বলতে পারবো না।
তিনি বলেন, মিডিয়া ও প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তারা আছেন, আপনারাও যদি কোন তথ্য-উপাত্ত পান, অবশ্যই আমাদের জানাবেন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করব এবং এর সঙ্গে যদি কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় আমরা ব্যবস্থা নেব।
বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে জানিয়ে দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক আরও বলেন, আটককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, তিনি প্রতি ডোজ টিকা ১ হাজার টাকার বিনিময়ে মানুষকে দিতেন। তিনি এখন পর্যন্ত কত জনকে টিকা দিয়েছেন এবং কোথায় থেকে এ টিকা পেয়েছেন তা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।