
নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মিশন নূর হাদি নামের (১০) বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এক মাদ্রাসাশিক্ষকসহ আরও ১৮ জন অসুস্থ হয়েছেন।
তার মধ্যে ১৭ অসুস্থ শিশুকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবার বয়স ৯ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। এ ঘটনায় নিহতের চাচার দায়ের করা মামলায় ৬ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে একলাশপুর বাজারের দোতালা মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিশন নূর হাদি ওই মাদ্রাসার নূরানী শাখার ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি দিনের মতো এশার নামাজ শেষ করে রাত ৯টার দিকে মাদ্রাসার একজন শিক্ষকসহ রাতের খাবার খায় নূরানীর শাখার প্রায় ১৮ জন শিশু শিক্ষার্থী। খাওয়ার শেষ পর্যায়ে এসে একজন একজন করে সবাই বমি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে সবাই বমি করতে শুরু করলে মাদ্রাসা কৃর্তপক্ষ স্থানীয় একজন চিকিৎসকে সেখানে নিয়ে যান। পরে তিনি তাদের অবস্থা দেখে দ্রুত জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাত ১১টার দিকে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অসুস্থদের পাশে হাসপাতালে থাকা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নূরানীর ছাত্ররা যখন ভাত খাচ্ছিল, তখন আমরা নামাজ পড়ছিলাম। তাদের চিৎকার শুনে আমরা এসে দেখি সবাই বমি করছে। গরুর মাংসগুলো একসাথে দুপুরে রান্না করে আলাদা দুই ভাগ করে রাখা হয়েছিল। দুপুরে খাওয়ার পর কারও সমস্য হয়নি।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, রাতে ভাতের সাথে বাচ্চাদের গরুর মাংস দেওয়া হয়। যা দুপুরেও তারা খেয়েছিল। স্থানীয় এক মহিলা তাদের খাওয়ারগুলো রান্না করেন।’
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, হাসপাতালে ১৮ জন শিশু শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসার পর একজন মারা যায়। অন্য শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এ সমস্যা হয়েছে বলে রোগীদের সঙ্গে আসা লোকজন জানিয়েছে। দুই শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান সিকদার জানান, শিশু মিশন নূর নাহিদের মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচা আহসান উল্যাহ বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহারভুক্তদের মধ্যে মাদ্রাসার ছয় শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।